অনেক ব্যবসার ক্ষেত্রে যখন নতুন কোনো পণ্য ক্রয় করা হয়, তখন দেখা যায় নতুন আসা পণ্যগুলোই আগে বিক্রি করা হয়। অর্থাৎ, যেগুলো স্টকে সর্বশেষ যোগ হয়েছে, সেগুলোই আগে বেরিয়ে যায়। হিসাববিজ্ঞানের ভাষায় এই নিয়মকে বলা হয় LIFO পদ্ধতি (Last In, First Out)। মানে, যে পণ্য পরে এসেছে, সেটাই আগে বিক্রি হবে।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের (অটো মোবাইল, হার্ডওয়্যার, রড-সিমেন্ট ইত্যাদি) জন্য LIFO হতে পারে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি। ব্যবসায় যখন আপনি স্টক ম্যানেজ করেন, তখন কোন দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে এবং মুনাফা কেমন আসছে সেটা সঠিকভাবে হিসাব রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। লিফো বা LIFO পদ্ধতি (Last In, First Out) হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আপনি ধরে নেন যে যেসব পণ্য পরে কিনেছেন, সেগুলো আগে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায় LIFO পদ্ধতির সুবিধা-
- সহজেই বোঝা যায় (পরে কেনা পণ্য আগে বিক্রি হবে)।
- স্টক খরচ হিসাব সহজ হয়।
- দীর্ঘ দিন রাখা যায় বা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম এমন পণ্যে বেশি কার্যকর।
চলুন এবার LIFO পদ্ধতি এবং হিসাবপাতি অ্যাপে এই পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।
ব্লগে যা থাকছে-
হিসাবপাতি’তে ব্যাচ বা লট কীভাবে নির্ধারিত হবে?
ব্যবসায় যখন আপনি পণ্য ক্রয় করেন, তখন প্রতিবার ক্রয়কে হিসাবপাতি একটি আলাদা ব্যাচ হিসেবে ট্র্যাক করবে।
- প্রথমবার আপনি যদি ৫০ পিস ১০০ টাকায় কিনেন → এটি হবে প্রথম ব্যাচ
- পরেরবার আবার ৫০ পিস ১২০ টাকায় কিনলে → এটি হবে দ্বিতীয় ব্যাচ
এভাবে প্রতিবার নতুন দামে কেনা পণ্য নতুন ব্যাচ হিসেবে রেকর্ড হবে। হিসাবপাতি’তে পণ্য ক্রয় করা ছাড়াও আপনি স্টকে পণ্য যুক্ত করতে পারেন। যেমন- স্টক সমন্বয় থেকে স্টক বাড়ানোর মাধ্যমে। আপনি উপরের দুটি ক্রয়ের পর যদি স্টক সমন্বয়ের মাধ্যমে স্টক বাড়ান তখন সেটা তৃতীয় ব্যাচ হিসেবে যুক্ত হবে।
একইভাবে কোন পণ্য যখন যুক্ত করবেন তখন সেটার একটি ক্রয়মুল্য আর আগের মজুদ যুক্ত করতে পারেন।
পণ্য যোগ করার সময়ে আগের মজুদ এবং ক্রয়মূল্য যুক্ত করলে কিংবা কয়েকটি ক্রয়ের পরেও যদি আপনি পণ্য এডিট করে আগের মজুদ যুক্ত করেন আগের মজুদ সব সময় প্রথম ব্যাচ হিসেবেই যুক্ত হবে। আপনি যদি দুইবার ক্রয়ের পরে পণ্য এডিট করে আগের মজুদ যুক্ত করেন তাহলে ও সেটা প্রথম ব্যাচ হিসেবে রেকর্ড হবে।
হিসাবপাতি’র পণ্য লিস্ট পেজে আপনি প্রতিটি পণ্যের ক্রয়মূল্য এবং বিক্রয়মূল্য দেখতে পারেন। লিফো পলিসিতে থাকাকালীন আপনি স্টকে থাকা শেষ ব্যাচের ক্রয়মূল্য দেখতে পাবেন।

ওয়েব ভার্সনে প্রতিটি পণ্যের সাথে স্টক বিস্তারিত দেখার আইকন পাবেন। আর অ্যাপে এটা পাবেন থ্রি ডটস আইকনে ট্যাপ করলে। স্টক বিস্তারিত আইকনে ট্যাপ করলে স্টকে থাকা প্রতিটি ব্যাচের ক্রয়মূল্য এবং স্টক দেখতে পারবেন।

আপনারা যারা আগে থেকে হিসাবপাতি’তে লেনদেন করছেন তাদের প্রতিটি পণ্যের এই মুহূর্তের স্টক এবং এই মুহূর্তে পণ্যের যে ক্রয়মূল্য দেয়া আছে সেটাই হবে প্রথম ব্যাচ এবং সেই ব্যাচের ক্রয়মূল্য। তারপর যখন আবার ক্রয় করবেন বা স্টক সমন্বয় করবেন সেগুলো ক্রমান্বয়ে দ্বিতীয়, তৃতীয় ব্যাচ হিসেবে রেকর্ড হবে।
LIFO পদ্ধতিতে লাভ-ক্ষতি এবং স্টক ভ্যালু কীভাবে নির্ধারিত হবে?
লিফো পদ্ধতিতে বিক্রয়ের জন্য খরচ ধরা হয় শেষ ব্যাচের ক্রয়মূল্য অনুযায়ী, তারপর পরবর্তী ব্যাচের। অর্থাৎ সবসময় শেষ ব্যাচ থেকেই পণ্য বিক্রি হয়। ধরা যাক, আপনার একটাই পণ্য এবং তার স্টক এভাবে আছে-
- প্রথম ব্যাচ: ১০০ পিস, প্রতি পিস ক্রয়মূল্য ৫০ টাকা → মোট খরচ ৫,০০০ টাকা
- দ্বিতীয় ব্যাচ: ১০০ পিস, প্রতি পিস ক্রয়মূল্য ৬০ টাকা → মোট খরচ ৬,০০০ টাকা
মোট স্টক = ২০০ পিস
মোট স্টক ভ্যালু = ৫,০০০ + ৬,০০০ = ১১,০০০ টাকা
তারপর আপনি ১২০ পিস বিক্রি করলেন, বিক্রয়মূল্য ৭০ টাকা।
LIFO পদ্ধতি অনুযায়ী বিক্রয়ের খরচ (COGS)
- প্রথম ১০০ পিস দ্বিতীয় ব্যাচ থেকে → ১০০ × ৬০ = ৬,০০০ টাকা
- পরবর্তী ২০ পিস প্রথম ব্যাচ থেকে → ২০ × ৫০ = ১,০০০ টাকা
- মোট COGS (Cost of Goods Sold) = ৬,০০০ + ১,০০০ = ৭০০০ টাকা
বিক্রয় আয়: ১২০ × ৭০ = ৮,৪০০ টাকা
লাভ: ৮,৪০০ – ৭০০০ = ১৪০০ টাকা
বিক্রয় শেষে আপনার স্টক হবে-
- প্রথম ব্যাচ: ৮০ পিস, প্রতি পিস ক্রয়মূল্য ৫০ টাকা → মোট খরচ= ৪০০০ টাকা
মোট স্টক ভ্যালু = ৪০০০ টাকা
এভাবে আপনার যতগুলো পণ্য থাকবে সবগুলোর সম্মিলিত যোগফল হবে আপনার সম্মিলিত স্টক ভ্যালু। হিসাবপাতি’র স্টক সামারি রিপোর্টে প্রতিটি পণ্যের স্টক ভ্যালু দেখতে পাবেন এবং ট্যাপ করলে ব্যাচ অনুযায়ী ক্রয়মূল্য এবং স্টকের পরিমাণ দেখতে পাবেন।
সম্মিলিত লাভ-ক্ষতির পাশাপাশি প্রতিটি বিক্রয়ে কত টাকা লাভ বা ক্ষতি হলো সেটা আপনি জানতে পারবেন বিক্রয় পেজেই।

বিজনেস প্যাকেজে তথ্যের নিরাপত্তার খাতিরে কেবলমাত্র মালিক প্রতি লেনদেনের লাভ-ক্ষতি দেখতে পারবেন।
হিসাবপাতি’তে বিক্রয় অনুযায়ী লাভ ক্ষতি রিপোর্ট দেখতে পাবেন এবং কীভাবে লাভ নির্ধারণ হয়েছে তাও জানতে পারবেন। এই রিপোর্টের ‘বিস্তারিত দেখুন’-এ ক্লিক করলে কোন পণ্য কোন ব্যাচ থেকে কী পরিমানে বিক্রি করা হয়েছে তা আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন।
বিক্রয়ের পরে ক্রয় রেকর্ড এডিট করলে কী হবে?
ধরা যাক, আপনার স্টক ছিল-
- প্রথম ব্যাচ: ১০০ পিস, প্রতি পিস ৫০ টাকা
- দ্বিতীয় ব্যাচ: ৮০ পিস, প্রতি পিস ৬০ টাকা
আপনি ১২০ পিস বিক্রি করেছেন ৭০ টাকা বিক্রয়মূল্যে → LIFO পদ্ধতি অনুযায়ী-
- প্রথম ৮০ পিস (৬০ টাকা)
- পরবর্তী ৪০ পিস (৫০ টাকা)
লাভ = ১৬০০ টাকা, বাকি স্টক = ৬০ পিস (৫০ টাকার লট)
এখন যদি প্রথম ব্যাচের ক্রয়মূল্য আপনি ভুলে ৫০ টাকা দিয়ে এন্ট্রি করেছিলেন, তাই সেই ক্রয় লেনদেনটি এডিট করে ৫৫ টাকা করেছেন, তাহলে যা যা হবে-
- স্টকে থাকা ৬০ পিসের নতুন স্টক ভ্যালু হবে → ৬০ × ৫৫ = ৩,৩০০ টাকা
- ভবিষ্যতে বিক্রি হলে নতুন ক্রয়মূল্য অনুযায়ী COGS (Cost of Goods Sold) হিসাব হবে
- এই এডিটের আগে করা বিক্রয়টি আগের অবস্থাতেই অক্ষত থাকবে। সেখানকার লাভ ক্ষতি আগের মতই থাকবে।
বিক্রয় লেনদেন আপডেট করলে কী হবে?
ধরা যাক আপনার স্টক ছিল-
- প্রথম ব্যাচ: ১০০ পিস, প্রতি পিস ৫০ টাকা
- দ্বিতীয় ব্যাচ: ৮০ পিস, প্রতি পিস ৬০ টাকা
আপনি ১২০ পিস বিক্রি করেছেন ৭০ টাকা বিক্রয়মূল্যে → LIFO পদ্ধতি অনুযায়ী-
- প্রথম ৮০ পিস (৬০ টাকা)
- পরবর্তী ৪০ পিস (৫০ টাকা)
লাভ = ১৬০০ টাকা, স্টক বাকি = ৬০ পিস (৫০ টাকা লট)
বিক্রয় লেনদেন এডিট করার কিছু উদাহরণ
১. বিক্রয় পরিমাণ পরিবর্তন
- ধরুন বিক্রি এখন ১২০ → ১০০ পিস
- ২০ পিস স্টকে ফিরে যাবে (প্রথম ব্যাচের ৫০ টাকার লটে, সবসময় যে ব্যাচের পণ্য সে ব্যাচে ফেরত যাবে সেই ব্যাচের ক্রয়মূল্য অনুসারে)
- স্টক ভ্যালু আপডেট হবে
- বিক্রয়ের লাভও নতুন হিসাব অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে
২. বিক্রয় মূল্য পরিবর্তন
- ধরুন প্রতি পিস ৭০ → ৮০ টাকা
- COGS আগের মতো থাকবে, কিন্তু বিক্রয় আয় বৃদ্ধি পাবে
- ফলস্বরূপ লাভ বৃদ্ধি পাবে
৩. বিক্রয়ের পণ্য পরিবর্তন
- ধরুন কিছু পণ্য বাতিল বা নতুন পণ্য যোগ করা হয়
- স্টক স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাচ অনুযায়ী কমবে/বাড়বে
- লাভ-ক্ষতি নতুন হিসাব অনুযায়ী আপডেট হবে
লিফো বা LIFO পদ্ধতিতে বিক্রয় ফেরত হলে কী হবে?
বিক্রয় ফেরত (Sales Return) মানে হলো— আগে যেসব পণ্য বিক্রি হয়েছিল, তার কিছু অংশ কাস্টমার ফেরত দিলো।
- যদি আপনি বিক্রয় থেকে বিক্রয় ফেরত করেন। LIFO পদ্ধতিতে ফেরত আসা পণ্য যেই ব্যাচ থেকে বের হয়েছিল, সেই ব্যাচের ক্রয়মূল্যে আবার স্টকে ফিরবে।
- যদি কোন ব্যাচের সব পণ্য ইতিমধ্যে স্টক আউট হয়ে যায় সেক্ষেত্রে নতুন একটি ব্যাচ তৈরি হয়ে যাবে।
- আর যদি কোন নির্দিষ্ট বিক্রয়ের অধীনে বিক্রয় ফেরত না করেন তাহলে পণ্যের প্রাথমিক ক্রয়মূল্যে স্টকে যুক্ত হবে নতুন ব্যাচ হিসেবে।
- ফেরত আসা পণ্যের জন্য সামগ্রিক বিক্রয় আয় কমবে।
- সামগ্রিক লাভ বা ক্ষতি নতুন হিসাব অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হবে।
- স্টক ভ্যালুও বৃদ্ধি পাবে সে অনুযায়ী।
লিফো বা LIFO পদ্ধতিতে ক্রয় ফেরত হলে কী হবে?
ক্রয় ফেরত মানে হলো- আপনি আগে যেসব পণ্য ক্রয় করেছিলেন, যে কোন কারণে আপনি সাপ্লায়ারকে পণ্য ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে নিবেন।
- LIFO পদ্ধতি অনুসারে, কোন নির্দিষ্ট ক্রয় থেকে ক্রয় ফেরত করা হলে যেই ব্যাচের পণ্য সেই ব্যাচ থেকে ফেরত যাবে সেই ব্যাচের ক্রয় মূল্য অনুসারে।
- আপনি যদি ক্রয় ফেরতের সময় অন্য কোন ক্রয়মূল্য দিতে চান সেটা দিতে পারবেন, যা সাপ্লায়ারের পার্টি ব্যালেন্সে প্রভাব ফেলবে। কিন্তু স্টক থেকে বের হবে ব্যাচের ক্রয়মূল্য অনুসারে, ব্যাচে থাকা বাকি পণ্যের ক্রয়মূল্য আগের মতোই থাকবে।
- এটিও আপনি চাইলে পরিবর্তন করতে পারবেন সেই ক্রয় লেনদেনের ক্রয়মূল্য আপডেট করার মাধ্যমে।
- আর আপনি যদি কোন নির্দিষ্ট ক্রয়ের অধীনে ক্রয় ফেরত না করেন তাহলে লিফো অনুযায়ী শেষ ব্যাচ থেকে স্টক কমবে।
অফলাইন ব্যবহারে লিফো পদ্ধতিতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে?
হিসাবপাতি অ্যাপটি যেহেতু অফলাইনে ব্যবহার করা যায়, লিফো পলিসিতেও অফলাইনে আপনি সকল ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। ক্রয়, বিক্রয় সহ সকল লেনদেন করতে পারবেন। যখনই আপনার ডিভাইস অনলাইনে ফেরত আসবে ডাটাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনলাইনে তথা সার্ভারে চলে আসবে। তবে, এক্ষেত্রে কিছু পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
যেমনঃ আপনি অফলাইনে যখন বিক্রি করেছেন তখন আপনার বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা ক্রয়মূল্যের ব্যাচ থেকে। কিন্তু আপনি অনলাইনে আসার আগেই অন্য কোন ডিভাইসে আপনার প্রতিষ্ঠানের অন্য কোন কর্মী অনলাইনে সেই একই পণ্য বিক্রি করেছে ১০০ টাকা ক্রয়মূল্যের ব্যাচ থেকেই। এই পরিস্থিতিতে সার্ভারে ইতিমধ্যে সেই ব্যাচ থেকে পণ্য কমে গেছে। এক্ষেত্রে আপনার ডিভাইস যখন অনলাইনে ফেরত আসবে তখন তিনটি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
- পরিস্থিতি ১ঃ অনলাইনে বিক্রি হলেও এখনো এই ব্যাচে আপনি যেই পরিমাণ পণ্য অফলাইনে বিক্রয় করেছিলেন সেই পরিমাণ পণ্য রয়েছে।
- পরিস্থিতি ২ঃ অনলাইনে বিক্রি করার পর আপনি যেই পরিমাণ পণ্য অফলাইনে বিক্রয় করেছিলেন সেই পরিমাণ পণ্য নেই, তবে পরবর্তী ব্যাচগুলোতে সেই পরিমাণ পণ্য রয়েছে।
- পরিস্থিতি ৩ঃ অনলাইনে বিক্রি করার পর আপনি যেই পরিমাণ পণ্য অনলাইনে বিক্রয় করেছেইলেন সেই পরিমাণ পণ্য সবগুলো ব্যাচ মিলিয়েও নেই বা একেবারেই নেই।
হিসাবের স্বচ্ছতার জন্য হিসাবপাতি’র বিশেষ ব্যবস্থা
হিসাবপাতি সর্বদা ব্যবসার হিসাবে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। এজন্য বিক্রয় লিস্ট পেজের প্রতিটি বিক্রয়ের ডানপাশে দুই ধরনের চিহ্ন বা সাইন ব্যবহার করা হয়—
- একটি হলো বেগুনী টিক মার্ক বা চেক (✓) চিহ্ন: এই সাইনের মানে হলো, এই লেনদেনটি অনলাইন বা অফলাইন যে অবস্থাতেই করা হোক না কেনো হিসাব যেভাবে হয়েছিলো সেভাবেই সার্ভারে সংরক্ষিত আছে। কোন জটিলতা নেই। উপরে বর্ণিত তিনটি পরিস্থিতির প্রথম পরিস্থিতির ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য।
- অন্যটি হলো হলুদ এক্সক্লামেটরি (!) চিহ্ন: এই সাইনের মানে হলো, এই লেনদেনটিতে অফলাইনে যেভাবে হিসাব করা হয়েছিলো অনলাইনে আসলেও একইভাবে সিঙ্ক করা সম্ভব হয়নি। কিছু বিষয় অসম্পন্ন আছে, যা আপনাকে জানিয়ে সম্পন্ন করবে। যা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পরিস্থিতির জন্য প্রযোজ্য হবে।

কী ধরনের পরিবর্তন করা হয়েছে বা কী অসম্পন্ন আছে জানতে হলুদ এক্সক্লেমেটরি সাইনটিতে ট্যাপ/ক্লিক করুন। আপনাকে ‘সমন্বয়কৃত রেকর্ড’ পেজে নিয়ে যাবে।

একটি লেনদেনে অনেক পণ্য থাকতে পারে। যে কয়টা পণ্যে সমন্বয় প্রয়োজন হয়েছে সেই কয়টা পণ্য এই পেজে আসবে।
লিস্টের নির্দিষ্ট পণ্যে ট্যাপ করলে বিস্তারিত দেখা যাবে
যদি দ্বিতীয় পরিস্থিতি হয়, অর্থাৎ পণ্য অফলাইনে বিক্রি করেছেন কিন্তু অনলাইনে আসার পর দেখা গেলো সেই পরিমাণ পণ্য সেই ব্যাচে নেই কিন্তু পরবর্তী ব্যাচগুলোতে আছে। তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় হয়ে যাবে পরবর্তী ব্যাচগুলো থেকে। আর সেটাই আপনি দেখতে পারবেন নিচের ছবির মতো করে।

বাম পাশের কলামে দেখা যাবে অফলাইনে কত টাকা ক্রয়মূল্যের পণ্য বিক্রয় করেছিলেন। আর ডানপাশে দেখা যাবে অনলাইনে আসার পর পরবর্তী কোন ব্যাচ থেকে সেটা সমন্বয় হয়েছে। সেই অনুযায়ী আপনার এই লেনদেনটির লাভ-ক্ষতিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় হয়ে গেছে। এখানে আপনি দুটি বাটন পাবেন। সবগুলো পণ্যের সমন্বয়ে ওকে-তে ট্যাপ করলে লেনদেনের পাশের হলুদ এক্সক্লেমেটরি সাইনটি টিক চিহ্নে পরিণত হবে।
আর যদি তৃতীয় পরিস্থিতি হয় অর্থাৎ পণ্য অফলাইনে বিক্রি করেছেন কিন্তু অনলাইনে আসার পর দেখা গেলো সেই পরিমাণ পণ্য স্টকে নেই তাই সমন্বয় করা যায়নি। লেনদেনটি এই অবস্থায় আছে। যে কারণে ওকে বাটনটি নিষ্ক্রিয় আছে এবং একটি সমন্বয়ের বাটন আছে এটিও নিষ্ক্রিয় আছে।

আপনি পণ্য আবার স্টকে যুক্ত করলে সমন্বয় বাটনটি সক্রিয় হবে।

আপনি সমন্বয় বাটনে ট্যাপ করে সমন্বয় করলে তারপর ওকে বাটনটিও সক্রিয় হবে। তারপর যথারীতি ওকে বাটনে ট্যাপ করলে হলুদ এক্সক্লেমেটরি চিহ্নটি টিক মার্কে পরিবর্তিত হবে।
হিসাবপাতি’তে লিফো পদ্ধতি (LIFO- Last In First Out) ব্যবহার করুন
লিফো পদ্ধতি (LIFO- Last In First Out) ব্যবসায় হিসাব রাখার নির্ভরযোগ্য উপায়গুলোর একটি। হিসাবপাতি অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায়ী অনলাইন-অফলাইন উভয় অবস্থায়ই নির্বিঘ্নে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। অফলাইনে হিসাব করার পর অনলাইনে সিঙ্ক হওয়ার সময় যদি কোনো পরিবর্তন ঘটে, সেটিও ব্যবহারকারী স্পষ্টভাবে দেখতে পান। ব্যবসার আপডেটেড রিপোর্ট এবং নির্ভুল লাভ-ক্ষতির হিসাব নিশ্চিত করুন হিসাবপাতি’র সাথে!
ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!
- ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন:
প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করতে আজই ফ্রিতে ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন- ‘হিসাবপাতি’
এরপরেই রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!
- ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন:
সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।
- ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন:
হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন।
জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো
হিসাবপাতি সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি বিভিন্ন মেয়াদে এবং সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে। হিসাবপাতি’র সকল প্যাকেজের মূল্য ও ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!
