ব্যবসায় সফল হতে চাইলে শুধু আয় বাড়ালেই হবে না, সঠিকভাবে টাকা জমানোর উপায় জানাও জরুরি। অনেক উদ্যোক্তা আয় বাড়ালেও সঞ্চয় করতে পারেন না, ফলে ভবিষ্যতে আর্থিক সংকটে পড়েন। ব্যবসার শুরুতেই যদি সঠিক পরিকল্পনা করে টাকা জমানো যায়, তবে ভবিষ্যতে বিনিয়োগ, ব্যবসা বড় করায় বা জরুরি অবস্থায় তা কাজে লাগে। ব্যবসা শুরু করা মানেই ঝুঁকি এবং অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে পথ চলা। এই সময়ে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জটি আসে, সেটি হলো ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্য ‘টাকা জমানো’।
অনেক উদ্যোক্তা মনে করেন, ব্যবসা যখন বড় হবে তখন সঞ্চয় করবো। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ব্যবসার শুরুতেই সঠিক পরিকল্পনা না করলে ভবিষ্যতে অনেক বড় সমস্যায় পড়তে হয়। তাই শুরু থেকেই টাকা জমানোর উপায় জানা এবং তা অনুসরণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কেন ব্যবসায়ীদের জন্য টাকা জমানো গুরুত্বপূর্ণ, কেন আমাদের হাতে টাকা থাকে না এবং কীভাবে শুরু থেকেই আপনি সাতটি কার্যকর উপায়ে টাকা জমাতে পারেন।
ব্লগে যা থাকছে-
ব্যবসায়ীদের জন্য টাকা জমানো কেন জরুরি?
আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের জন্যই টাকা জমানো কেন জরুরি? ব্যবসার জগতে টিকে থাকতে হলে শুধুমাত্র আয় করলেই চলবে না, সঠিকভাবে খরচ নিয়ন্ত্রণ এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেয়াও জরুরি। টাকা সঞ্চয় করার উপায় জানা থাকলে আপনার জন্য যা সহজ হয়ে যাবে-
- অপ্রত্যাশিত খরচ মোকাবেলা করতে পারবেন
- নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাতে পারবেন
- ব্যবসায় মন্দা চলাকালীন সময়ে টিকে থাকতে পারবেন
- মানসিকভাবে নিরাপদ বোধ করবেন
আসলে সঞ্চয় হলো ব্যবসার এক ধরনের সেফটি নেট, যা আপনাকে অনিশ্চয়তার মধ্যেও স্থির থাকতে সহায়তা করে। টাকা জমানোর কৌশল বা অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি একটি শক্ত আর্থিক ভিত তৈরি করতে পারবেন যা ভবিষ্যতে ব্যবসার প্রসারে সাহায্য করবে।
হাতে টাকা থাকে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন!
এবার আপনার হাতে টাকা থাকে না কেন, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে! অনেক ব্যবসায়ীর সাধারণ অভিযোগ হলো, ‘মাস শেষে দেখি কিছুই থাকছে না!’ কেন এমন হয়? আসুন কিছু কারণ জেনে নেই-
- অপরিকল্পিত খরচ এর মূল কারণ। কোন খাতে কত টাকা খরচ হচ্ছে, তার সঠিক হিসাব না রাখা অযাচিত খরচের শুরু!
- নিয়মিত বাজেট তৈরি না করা
- ক্রেডিটে বা বাকিতে কেনাকাটা করে দেনার পাহাড় তৈরি
- লাভ-ক্ষতির হিসাব না রাখা বা না জানা
- ব্যক্তিগত খরচ ও ব্যবসায়িক খরচের মিশ্রণ
এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথম ধাপ হলো, আপনার ব্যবসায়িক আর্থিক আচরণ বিশ্লেষণ করা এবং একটি ভালো মানের একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করা।
ব্যবসার শুরু থেকেই টাকা জমানোর সাত উপায়
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক, সাতটি কার্যকর এবং বাস্তবসম্মত টাকা জমানোর উপায়, যা আপনি ব্যবসার শুরু থেকেই অনুসরণ করতে পারেন।
১. আয় এবং খরচের স্পষ্ট হিসাব রাখুন
টাকা সঞ্চয় করার উপায়ের প্রথম ধাপ হলো আয় ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা। প্রতিদিনের ইনকাম, খরচ, লেনদেন, সবকিছু রেকর্ড রাখুন। একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করলে এই কাজটি সহজ ও নির্ভুল হবে। হিসাবা রাখার কাজটি সহজ হওয়া জরুরি, কারণ জটিল হলে আপনি ক্লান্ত বোধ করবেন এবং হিসাব রাখা ছেড়ে দেবেন।
২. ব্যবসার বাজেট ও পরিকল্পনা তৈরি করুন
প্রতিমাসে বা প্রতি বছরের জন্য ব্যবসার একটি নির্দিষ্ট বাজেট তৈরি করুন এবং সেই অনুযায়ী খরচ করুন। বাজেট আপনাকে খরচের গণ্ডি ঠিক করে দেয় এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ এড়াতে সাহায্য করে। বাজেট একটি ঘড়ির মতো, একবার সেট হয়ে গেলে আপনার মাথায় এটি সবসময় টিকটিক করে বাজতে থাকবে।
৩. লাভের নির্দিষ্ট একটি অংশ জমিয়ে রাখুন
ব্যবসা থেকে যে লাভ হয়, তার অন্তত ১০-২০% আলাদা করে রাখুন। এটি আপনার ফিউচার ফান্ড হিসেবে কাজ করবে। এটি টেকসই ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। এটিকে একটি অভ্যাসে পরিণত করতে পারলেই আপনি মুক্ত!
৪. ব্যবসার ও জীবনযাপনের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমান
অফিসে অতিরিক্ত লোকবল অথবা অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ খরচের মতো বিভিন্ন খাত রিভিউ করুন। এই খরচগুলো কমিয়ে সঞ্চয় বাড়ানো যায়। একটা সহজ সমাধান দেই, সবসময় মনে রাখবেন- এক টাকা সেভ মানে এক টাকা ইনকাম!
৫. একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
ব্যবসার প্রতিদিনের লেনদেন, পণ্য মজুদ, বিক্রির হিসাব রাখা এবং রিপোর্ট তৈরিতে অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার অনবদ্য। এটি আপনার সময় বাঁচায়, ভুল কমায় এবং অর্থনৈতিক অবস্থা পরিষ্কারভাবে বুঝতে সাহায্য করে। মনে রাখবেন, ব্যবসার হিসাবনিকাশকে যতটা সহজ ও নির্ভুল রাখবেন আপনি ততোই হিসাবের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবেন। নতুবা হিতে বিপরীত হবে, মানে আপনি বেহিসেবি একজন ব্যবসায়ী হয়ে উঠবেন।
৬. ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত খরচ আলাদা করুন
আপনার নিজের ব্যক্তিগত খরচ কখনোই ব্যবসার টাকায় করবেন না। দুটি আলাদা একাউন্ট চালু করুন এবং সে অনুযায়ী টাকা খরচ ও জমা করুন। এতে ব্যবসার সঠিক হিসাব রাখা সহজ হবে।
৭. সঞ্চয়ের জন্য আলাদা ফান্ড বা একাউন্ট তৈরি করুন
এটা সবচেয়ে সহজ কিন্তু জরুরি! টাকা জমানোর কৌশল হিসেবে, একটি আলাদা ব্যাংক একাউন্ট তৈরি করে রাখুন শুধুমাত্র সঞ্চয়ের জন্য। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সেই একাউন্টে জমা দিন।
ব্যবসার খরচ কমাতে অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করুন
অনেক সময় দেখা যায়, খরচ কমানোর চেষ্টা করছেন ঠিকই কিন্তু হিসাব রাখতে গিয়ে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করবেন। এই জায়গায় অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার হয়ে উঠতে পারে আপনার ব্যবসার একজন নিরব সহকারী!
একটি কার্যকর অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার আপনাকে যা দেয়-
- প্রতিদিনের লেনদেন রেকর্ড
- ইনভয়েস জেনারেট করার সুবিধা
- আয়-ব্যয়ের বিশ্লেষণ
- প্রফিট ও লস স্টেটমেন্ট বা রিপোর্টস
- স্টক ও ইনভেন্টরি ট্র্যাকিং
- বাকি বকেয়ার হিসাব, মেসেজ ও রিমাইন্ডার দেয়ার সুবিধা
- রিপোর্ট তৈরি ও ফাইন্যান্সিয়াল ডিসিশন নেয়ার সহায়তা
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপনি ব্যবসার খরচে স্বচ্ছতা আনতে পারবেন এবং সঠিক জায়গায় সঞ্চয়ের সুযোগ খুঁজে পাবেন।
ব্যবসার শুরু থেকেই টাকা জমানোর উপায় জানা থাকলে আপনি অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি মোকাবেলায় আরও বেশি প্রস্তুত থাকবেন। সঠিকভাবে আয় ও ব্যয়ের হিসাব রাখা, বাজেট তৈরি, লাভের নির্দিষ্ট অংশ জমা রাখা, খরচে নিয়ন্ত্রণ এবং অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য একটি টেকসই অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, টাকা সঞ্চয় করার উপায়গুলো প্রতিদিনের অভ্যাস থেকেই গড়ে ওঠে। তাই ব্যক্তিগত জীবন থেকেই শুরু করতে হবে!
ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!
- ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন:
প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করতে আজই ফ্রিতে ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন- ‘হিসাবপাতি’
এরপরেই রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!
- ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন:
সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।
- ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন:
হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।
হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন।
জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো
হিসাবপাতি’র সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা থেকে শুরু!
হিসাবপাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি মাসিক ও বাৎসরিক দুটি মেয়াদে এবং তিনটি সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
- ০১. বেসিক প্যাকেজ: বেসিক প্যাকেজটি সম্পূর্ণ ফ্রি! মানে, আপনি সাবস্ক্রিপশন কেনার আগে ফ্রিতে অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারছেন।
- ০২. প্রিমিয়াম প্যাকেজ: প্রিমিয়াম প্যাকেজের মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা এবং এই প্যাকেজের বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! এতে এক বছরে খরচ পড়বে মাত্র ৯৯৯ টাকা!
- ০৩. বিজনেস প্যাকেজ: বিজনেস প্যাকেজর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ১৯৯ টাকা। এই প্যাকেজেও বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে প্রিমিয়ামের মতোই আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! তাই এক বছরে খরচ পড়ছে মাত্র ১৯৯০ টাকা!
হিসাবপাতি অ্যাপের সকল প্যাকেজের ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!