আধুনিক টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নেবেন কীভাবে?

আধুনিক টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নেবেন কীভাবে

টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নিতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে, এটি শুধু কাপড় সেলাই বা বানানোর কাজ নয়, বরং এটি একইসাথে সৃজনশীল এবং লাভজনক উদ্যোগ। বর্তমান সময়ে কাস্টমাইজ ফ্যাশনের চাহিদা বাড়ছে প্রতিনিয়ত, আর তার সঙ্গে বাড়ছে দর্জিদের প্রয়োজন। একজন দক্ষ দর্জি বা টেইলার হতে হলে যেমন চাই দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ, তেমনই চাই পরিকল্পনা ও হিসাবনিকাশের বুদ্ধিমত্তা। আপনি যদি ছোট পরিসরে একটি টেইলার শপ দিয়ে শুরু করতে চান এবং ভবিষ্যতে বড় একটি Tailors Shop গড়ার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে আপনাকে সঠিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। 

এই ব্লগে আমরা জানবো টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নেয়ার ৭টি ধাপ, যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি সফলতার সাথে এগিয়ে যেতে পারবেন।

ব্লগে যা থাকছে-

ছোট, বড় বা মাঝারি ব্যবসা হিসেবে টেইলার্স ব্যবসা কেমন?

মজার ব্যাপার হলো, টেইলার্স ব্যবসা আপনি চাইলে একেবারে বাড়ি থেকেই শুরু করতে পারেন, আবার চাইলে একটি পূর্ণাঙ্গ টেইলার শপও গড়ে তুলতে পারেন। এটি এমন একটি ব্যবসা যেটি ছোট, মাঝারি ও বড়, সব আকারেই শুরু করে পরিচালনা করা যায়।

  • ছোট ব্যবসা হলে: বাড়ির একটি রুম, একটি সেলাই মেশিন আর কিছু কাপড় কাটার সরঞ্জাম দিয়ে শুরু করা সম্ভব।
  • মাঝারি ব্যবসা হলে: একটি দোকান ভাড়া নিয়ে দুই থেকে তিনজন কারিগরসহ কাজ শুরু করা যায়।
  • বড় ব্যবসা হলে: নিজের ব্যবসার ব্র্যান্ড তৈরি করে বড় পরিসরে বা ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলেও টেইলার শপ চালানো যায়।

তবে ব্যবসার পরিসর যেমনই হোক, সঠিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও হিসাবরক্ষণ ছাড়া এই ব্যবসায় সফল হওয়া কঠিন।

টেইলার্স ব্যবসা কি সবাই করতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো – হ্যাঁ, তবে কিছু শর্তে মনোযোগ দিতে হবে। যে কেউ এই ব্যবসা শুরু করতে পারে, যদি-

  • আপনার সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্স করা থাকে বা সেলাইয়ের বেসিক ধারণা থাকে।
  • আপনি পোশাকের ফ্যাশন সম্পর্কে আগ্রহী হন এবং নতুন ডিজাইন শিখতে চান।
  • ব্যবসার প্রাথমিক জ্ঞান যেমন বিপণন, কাস্টমার সার্ভিস, প্রোডাক্ট কালেকশন ও হিসাব রাখার দক্ষতা ইত্যাদি থাকে।
  • আপনি একজন বা একাধিক দক্ষ দর্জি নিয়োগ দিতে আর্থিকভাবে সক্ষম হন।

যদি প্রাথমিকভাবে এসব বিষয় আপনি আয়ত্তে আনেন, তাহলে টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি আপনার জন্য আর কঠিন থাকবে না।

টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি পর্বে যে ৭টি পদক্ষেপ নেবেন

টেইলার্স ব্যবসার সাফল্য নির্ভর করে কেমন পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে আপনি শুরু করছেন তার উপর। নিচে আমরা আলোচনা করবো টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নেয়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ-

১. মার্কেট বিশ্লেষণ ও কাস্টমার চাহিদা বুঝুন

ব্যবসা শুরুর আগে আপনার এলাকার বাজার সম্পর্কে ভালোভাবে গবেষণা করুন-

  • আপনার এলাকার মানুষ কী ধরনের পোশাক বেশি বানায়?
  • প্রতিযোগী টেইলার্স শপ (tailors shop) কেমন চলছে?
  • তারা কী ধরনের সার্ভিস দিচ্ছে?

এই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে আপনি জানতে পারবেন আপনার টেইলার শপ কোন দিকে ফোকাস করলে বেশি লাভবান হবে। এমন হতে পারে, কোনো এলাকায় হয়তো স্কুল ড্রেসের চাহিদা বেশি, আবার কোন এলাকায় লেডিস ড্রেসের চাহিদা বেশি।

২. সেলাই প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জন করুন

আপনি যদি নিজে সেলাই করতে চান, তাহলে অবশ্যই সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্স করে নিন। বর্তমানে অনেক অনলাইন ও অফলাইন কোর্স রয়েছে যেখানে আধুনিক মেশিন ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

আর যদি আপনি দর্জি নিয়োগ করতে চান, তাহলে সঠিকভাবে যাচাই করে দক্ষ দর্জি নির্বাচন করুন। প্রয়োজনে দর্জি প্রশিক্ষণ বই বা গাইড অনুসরণ করতে পারেন কর্মীদের জন্য। এখন এই বিষয়ে অনেক ভালো বই পাওয়া যায়। 

৩. দোকানের অবস্থান ও সাজসজ্জায় নজর দিতে হবে

একটি সুবিধাজনক স্থানে দোকান ভাড়া নিন। নিজস্ব জায়গা থাকলে সেখানেও শুরু করতে পারেন। দোকানের ডেকোরেশন ও ভেতরের পরিবেশ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। একটি ছোট টেইলার্স শপকে পরিপাটি করে সাজালে তা পেশাদার ইমপ্রেশন তৈরি করে।

সাজসজ্জার মধ্যে যা রাখবেন-

  • ম্যানিকিন (পোশাক প্রদর্শনের জন্য মানব মডেল)
  • ফ্যাব্রিক স্যাম্পল
  • আয়না ও ফিটিং রুম
  • ওয়েটিং চেয়ার

৪. সেলাই মেশিন ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনুন

টেইলার্স ব্যবসার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে কাজের গতি ও মান দুই-ই বাড়ে। আপনার যা প্রয়োজন হতে পারে-

  • সিঙ্গার বা জুকি সেলাই মেশিন
  • কাটিং টেবিল
  • মেজারমেন্ট টেপ
  • প্যাটার্ন কাটার
  • থ্রেড, বোতাম, জিপার, লেইস, জরি, পুঁথি ইত্যাদি

আপনার বাজেট অনুযায়ী প্রাথমিক সরঞ্জাম গুলো কিনে শুরু করতে পারেন। পরে কাস্টমার বুঝে আরও মাল ক্রয় করতে পারেন।

৫. টেইলার্স মেমো এবং অর্ডার ম্যানেজমেন্ট

প্রতিটি অর্ডারের সঠিক হিসাব রাখতে প্রয়োজন একটি স্ট্যান্ডার্ড টেইলার্স মেমো বা স্লিপ। এতে থাকবে- 

  • গ্রাহকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর
  • অর্ডার গ্রহণ ও ডেলিভারির তারিখ
  • মাপের ডিটেইলস
  • ডিজাইন ডিটেইলস
  • অগ্রিম টাকা ও মোট দাম

এই মেমো না থাকলে অর্ডার ম্যানেজমেন্টে জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই ব্যবসার শুরুতেই এমন একটি একাউন্টিং অ্যাপ ব্যবহার করুন যেটাতে হিসাবও রাখা যাবে আবার ইনভয়েস বা মেমোও তৈরি করা যাবে। এমন একটি অ্যাপ – হিসাবপাতি

৬. হিসাবরক্ষণ ও ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট

ব্যবসা যতই ছোট হোক, হিসাব ঠিকভাবে রাখতে না পারলে লোকসান হবেই। এক্ষেত্রে একটি ভালো হিসাবরক্ষণ অ্যাপ বা অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত। হিসাবপাতি অ্যাপ হতে পারে আপনার জন্য সেরা সমাধান। এটি ব্যবহার করলে আপনি-

  • অর্ডারের হিসাব পাবেন
  • খরচ ও লাভ ট্র্যাক করতে পারবেন
  • ক্রয়-বিক্রয়ের রিপোর্ট পাবেন
  • কাস্টমার ইনফো সেভ করতে পারবেন
  • বাকি বকেয়ার হিসাব রাখতে পারবেন।
  • এসব তথ্য খুব সহজেই মোবাইল থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

৭. মার্কেটিং ও কাস্টমার রিলেশন মজবুত করুন

একটি সফল টেইলার শপ গড়তে হলে শুধু ভালো পোশাক বানালেই হবে না, তার প্রচার করাও দরকার।

  • ফেসবুক পেজ খুলে ডিজাইন শেয়ার করুন
  • ইনস্টাগ্রামে নতুন নতুন মডেল তুলে ধরুন
  • পরিচিতদের মধ্যে রেফারেন্স দিন
  • ডেলিভারির সময় একটি ভিজিটিং কার্ড দিন

আপনার সার্ভিস ভালো হলে পুরনো গ্রাহকরাই আপনাকে নতুন ক্লায়েন্ট এনে দেবে।

সবশেষে, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে। যত ভালো কাজই জানুন, সেলাই প্রশিক্ষন কোর্স নিন। এটা আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। সাথে সেলাই প্রশিক্ষণের উপর বিভিন্ন বই কিনতে পারেন। মাঝেমাঝে ইউটিউবে বিভিন্ন টিউটোরিয়ালও দেখুন।

মনে রাখবেন, যতো ভালো প্রস্তুতি ততো ভালো রেজাল্ট!

টেইলার্স ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি নিতে হলে আপনাকে বাজার বিশ্লেষণ, সেলাই প্রশিক্ষণ, দোকানের পরিকল্পনা, সেলাই মেশিন সংগ্রহ, মেমো বা ইনভয়েস ম্যানেজমেন্ট, হিসাবরক্ষণ এবং মার্কেটিং করতে হবে। এই ধাপগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে অনুসরণ করেন, তবে আপনি একজন সফল টেইলার ব্যবসায়ী হতে পারবেন। আর হিসাবরক্ষণে ভুল না করতে চাইলে হিসাবপাতি অ্যাপ ব্যবহার করে আপনার ব্যবসাকে আরও নির্ভুলভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। 

টেইলার্স ব্যবসা যেমন একটি সৃজনশীল সেক্টর, তেমনই এটি একটি সুনিপুণ ব্যবস্থাপনার ব্যবসাও বটে। আপনি যদি প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপ গুরুত্বসহকারে নেন তাহলে সফল হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র! 

ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!

  • ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন: 

প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করতে আজই ফ্রিতে ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন- ‘হিসাবপাতি’

হিসাবপাতি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ

হিসাবপাতি আইওএস অ্যাপ

এরপরেই রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!

  • ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন: 

সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।

  • ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন: 

হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। 

হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন। 

জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো

হিসাবপাতি’র সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা থেকে শুরু!

হিসাবপাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি মাসিক ও বাৎসরিক দুটি মেয়াদে এবং তিনটি সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে।

  • ০১. বেসিক প্যাকেজ: বেসিক প্যাকেজটি সম্পূর্ণ ফ্রি! মানে, আপনি সাবস্ক্রিপশন কেনার আগে ফ্রিতে অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারছেন।
  • ০২. প্রিমিয়াম প্যাকেজ: প্রিমিয়াম প্যাকেজের মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ৯৯ টাকা এবং এই প্যাকেজের  বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! এতে এক বছরে খরচ পড়বে মাত্র ৯৯৯ টাকা!
  • ০৩. বিজনেস প্যাকেজ: বিজনেস প্যাকেজর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি মাত্র ১৯৯ টাকা। এই প্যাকেজেও বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনে প্রিমিয়ামের মতোই আছে ১৭% ডিসকাউন্ট! তাই এক বছরে খরচ পড়ছে মাত্র ১৯৯০ টাকা!

হিসাবপাতি অ্যাপের সকল প্যাকেজের ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!

Search
সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ
আজই আমাদের অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অনলাইন বা অফলাইনে যেকোন জায়গা থেকে সহজেই আপনার দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করুন।