ব্যবসা করছেন তবুও হাতে টাকা থাকে না কেন?

ব্যবসা করছেন তবুও হাতে টাকা থাকে না কেন?

ব্যবসা করছেন তবুও হাতে টাকা থাকে না কেন?

অনেক ব্যবসায়ী প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করেবন। তাদের দোকান চলছে, পণ্য বিক্রি হচ্ছে, কাস্টমারও আছে, সব ঠিকঠাক। তবুও মাস শেষে হিসাব করলে দেখা যায়, হাতে টাকা থাকে না! অবাক হবেন না! এটি শুধু আপনার একার সমস্যা নয়, বরং বেশিরভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের অভিন্ন এক দুশ্চিন্তার নাম- হাতে টাকা থাকে না কেন ?

কেন এমন হচ্ছে? আপনি তো আয় করছেন, তাহলে লাভ কোথায় যাচ্ছে? এর পেছনে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হলো সঠিকভাবে ক্যাশ ফ্লো ম্যানেজমেন্ট না করা। অর্থাৎ আয় ব্যয়ের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে না পারলে এবং নগদ টাকার প্রবাহ ঠিক না রাখতে পারলে, আপনি ব্যবসায়ী হয়েও সবসময় টানাপোড়েনে থাকবেন।

এই ব্লগে আমরা বিশ্লেষণ করবো কেন ব্যবসায়ী হয়েও হাতে টাকা থাকে না এবং কীভাবে আপনি স্মার্টভাবে ক্যাশ ফ্লো ম্যানেজ করে সেই পরিস্থিতি থেকে বের হতে পারেন।

ব্লগে যা থাকছে-

ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা থাকা জরুরি কেন?

একজন ব্যবসায়ীর সফলতা নির্ভর করে তার হাতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ থাকার উপর। তাই নগদ অর্থ বা টাকার প্রবাহ নিশ্চিত করা জরুরি। এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়, কেন? চলুন দেখি- 

  • দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা: ব্যবসায় হঠাৎ করে কোনো বাড়তি আয়ের সুযোগ আসলে সেটি ধরতে হলে হাতে টাকা থাকা জরুরি।
  • জরুরি খরচ সামাল দেওয়া: মালামালের দাম বেড়ে গেলে বা জরুরি রক্ষণাবেক্ষণ দরকার হলে, হাতে টাকা না থাকলে সমস্যা হয়।
  • কর্মচারীর বেতন ও বিল পরিশোধে স্বচ্ছতা: সময়মতো বেতন দিতে না পারলে প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাথে নানাবিধ বিল তো রয়েছেই।
  • মূলধন ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা: পর্যাপ্ত মূলধন ছাড়াও ব্যবসা চলতে পারে, কিন্তু পর্যাপ্ত নগদ অর্থ ছাড়া নয়। এই কথাটা অনেক ব্যবসায়ী মানতে চান না।

হাতে টাকা না থাকা মানে হচ্ছে, ব্যবসার গতি ধীর হওয়া। শুধু লাভ দেখলেই চলবে না, সেই লাভ যেন হাতেও আসে তা নিশ্চিত করাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

ব্যবসায়ী হয়েও আপনার হাতে টাকা থাকে না কেন?

আপনার ব্যবসা চলছে, কিন্তু মাস শেষে বা সপ্তাহ শেষে হতাশ হচ্ছেন এটা দেখে যে আপনার হাতে টাকা নেই! কেন এমন হয়? হাতে টাকা থাকে না কেন –

১. অতিরিক্ত ক্রেডিট বা বাকিতে সেল দেয়া

আপনি ক্রেতাদের খুব সহজেই বাকিতে পণ্য দিচ্ছেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে টাকা আসতে দেরি হচ্ছে। এই কারণে ক্যাশ-ইন ফ্লো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অথচ আপনার খরচ কিন্তু থেমে নেই, সেটা চলছেই। 

২. খরচের হিসাব না রাখা

ব্যবসার ছোটখাটো খরচ (যেমন: চা-পানির বিল, গাড়ি ভাড়া, ছোট রক্ষণাবেক্ষণ) অনেকেই রেকর্ড করেন না। মাস শেষে এইসব ছোট খরচই বিশাল অঙ্কে গিয়ে দাঁড়ায়।

৩. অপ্রয়োজনীয় খরচ

অনেক সময় ব্যবসার নামে ব্যক্তিগত খরচ করা হয়, যেমন পরিবারের কেনাকাটা, ঘুরতে যাওয়া বা উপহার দেওয়া, এগুলো আসলে ব্যবসায়িক খরচ নয়। অথচ এগুলো ব্যবসার টাকায় হয়। ফলাফল, হাতে টাকা থাকবে না!

৪. মুনাফাতে কম, বিক্রিতে নজর বেশি 

আজ অনেক বিক্রি হয়েছে- এই ভেবে খুশি হচ্ছেন। কিন্তু লাভ হয়েছে কি? বা কতটুকু লাভ হয়েছে? অনেকেই বিক্রিকে আয় ভেবে ভুল করেন, ফলে প্রকৃত লাভ বুঝতে পারেন না।

৫. ক্যাশ ফ্লো পরিকল্পনার অভাব

একটি সফল ব্যবসার জন্য সপ্তাহ ও মাসভিত্তিক ক্যাশ ফ্লো পরিকল্পনা করা জরুরি। আপনি জানেন না কখন কোন খরচ আসবে, আর কবে টাকা আসবে, ফলে হঠাৎ করেই হাতে টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে।

৬. স্টক বা ইনভেন্টরিতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ

মালামাল কিনে গুদামে রেখে দিচ্ছেন, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। অর্থাৎ টাকাগুলো জমে আছে ইনভেন্টরিতে। ফলে চলতি খরচ চালাতে আপনার হাতে টাকা থাকে না। এটা নতুন ছোট বা মাঝারি ব্যবসায়ীরা খুব করেন।

৭. হিসাববিহীন ব্যবসা পরিচালনা

আপনার ব্যবসায়িক হিসাব যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে কখন আয় হয়েছে, কখন খরচ হয়েছে, তা বোঝা কঠিন। এই অনিয়মই ধীরে ধীরে হাতে টাকা না থাকার মূল কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

সফলভাবে ক্যাশ ফ্লো ম্যানেজমেন্ট করবেন কীভাবে?

আপনি যদি চান ব্যবসার বেচাকেনা শেষেও যেন হাতে টাকা থাকে, তাহলে আপনাকে নিয়ম মেনে ক্যাশ ফ্লো ম্যানেজ করতে হবে। নিচে কিছু কার্যকরী কৌশল দিলাম- 

১. হিসাবনিকাশের জন্য হিসাবপাতি সফটওয়্যার ব্যবহার করুন

হিসাবপাতি (HishabPati) বা অন্য কোনো হিসাবরক্ষণ অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি প্রতিদিনের আয়, ব্যয়, লেনদেন, ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব রাখতে পারেন। এতে মাস শেষে বিশ্লেষণ করাও সহজ হয়।

২. ক্যাশ ফ্লো সামলাতে পরিকল্পনা তৈরি করুন

প্রতি মাসের শুরুতে একটি ক্যাশ ইন ও আউট পরিকল্পনা তৈরি করুন। কবে কী আসবে, কী যাবে তা আগেই লিখে রাখুন। এতে হঠাৎ করে হাতে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৩. ক্রেডিট বা বাকিতে লেনদেন নিয়ন্ত্রণে আনুন

ক্রেতাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা নেয়ার একটি নিয়ম তৈরি করুন। একইভাবে আপনি যাদের থেকে পণ্য নেন, তাদের সঙ্গেও সময় ঠিক করে নিন। আপনার জন্য এবং ক্রেতাদের জন্য ‘পেমেন্ট সাইকেল’ নির্ধারণ করুন।

৪. নিয়মিত লাভ ও ক্ষতির বিশ্লেষণ করুন

শুধু বিক্রি নয়, আপনি আসলে কতটা লাভ করছেন তা জানার জন্য একটি মাসিক প্রতিবেদন তৈরি করুন। এতে অপ্রয়োজনীয় খরচ চিহ্নিত করা সহজ হবে।

৫. ব্যক্তিগত খরচ আলাদা রাখুন

ব্যবসার টাকাকে ব্যক্তিগত খরচে ব্যবহার করা বন্ধ করুন। প্রয়োজনে নিজেকে নির্দিষ্ট বেতন দিন, আর ব্যবসার টাকা শুধু ব্যবসার কাজেই ব্যবহার করুন।

৬. পর্যাপ্ত জরুরি তহবিল বা ফান্ড রাখুন

হঠাৎ করে খরচ এলে যেন হাত খালি না থাকে, সেজন্য ১-২ মাসের খরচের সমান একটি তহবিল রেখে দিন। এটা বেশ কাজে দেবে।

৭. ইনভেন্টরি কন্ট্রোল করুন 

যে পণ্যগুলো বেশি সময় ধরে স্টকে পড়ে আছে, সেগুলো বিক্রি করার উপায় খুঁজুন। খুব বেশি স্টক রাখবেন না, এতে টাকা আটকে যায়।

সফল ব্যবসায়ীদের হাতে কেন সবসময় টাকা থাকে?

সফল ব্যবসায়ীরা সবসময় জানেন তাদের নগদ প্রবাহের অবস্থা কী। তারা হিসাবছাড়া খরচ করেন না, নিয়মিত ক্যাশ ফ্লো বিশ্লেষণ করেন এবং নিজেদের আয়ের উপর নির্ভর করে ব্যবসার সিদ্ধান্ত নেন। আপনি যদি চান ব্যবসা বড় হোক, তাহলে আগে নিশ্চিত করুন যেন দিনশেষে আপনার হাতে টাকা থাকে। কিছু সহজ কৌশলেই আপনি মাস শেষে হাতে পর্যাপ্ত টাকা রাখতে পারেন। এখন সময় এসেছে পরিকল্পিতভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার, যেন আয় হয়, লাভও হয়, আর হাতে সবসময় টাকা থাকে।

ব্যবসা শুধু আয় করার জন্য নয়, বরং সেই আয়কে আপনার হাতে আনার জন্য সঠিক হিসাব ও ক্যাশ ফ্লো ম্যানেজমেন্ট আবশ্যক। আপনার সমস্যা যদি হয়- হাতে টাকা থাকে না কেন ? তাহলে আজই আপনার ব্যবসার খরচ, আয় ও পেমেন্ট সাইকেল পর্যালোচনা করুন। প্রয়োজনে হিসাবরক্ষণ অ্যাপ ব্যবহার করুন এবং প্রতিদিনের হিসাব রাখতে শুরু করুন। স্মার্ট ব্যবসায়ীরা হাতে টাকা রেখে পরিকল্পনা করেন, আপনিও পারবেন!

ডেমো দেখে সহজ তিনটি ধাপে হিসাবপাতি’তে যাত্রা শুরু করুন!

  • ১ম ধাপ- হিসবাপাতি’তে সাইন আপ করুন: 

প্রথমেই হিসাবপাতি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ব্যবসার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অথবা ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করতে আজই ফ্রিতে ডাউনলোড করে ইন্সটল করুন- ‘হিসাবপাতি’

হিসাবপাতি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ

হিসাবপাতি আইওএস অ্যাপ

এরপরেই রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন। হিসাবপাতি’তে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটি সম্পূর্ণ ফ্রি!

  • ২য় ধাপ- আপনার কোম্পানি সেট-আপ করুন: 

সাইন আপ করে প্রথমেই মালিক হিসেবে আপনার কোম্পানির প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ব্যবসার প্রোফাইল সেট-আপ করুন। তারপর ইনভেনটরি থেকে শুরু করে ইউনিট, ক্রয়-বিক্রয়, বাকি বকেয়া, ইনভয়েস এবং লেনদেন সহ ব্যবসার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সেট-আপ করুন। এরপর শুরু করুন প্রতিদিনের লেনদেন আপডেট রাখার কাজ।

  • ৩য় ধাপ- হিসাবপাতি’র বিভিন্ন ফিচার উপভোগ করুন: 

হিসাবপাতি’তে ব্যবসার হিসাব রাখা শুরু করার পরে, প্রয়োজনীয় এবং ইউনিক ফিচারগুলো ব্যবহার করতে থাকুন। যেমন- ইনভয়েস, বারকোড স্ক্যানার, ইউনিট, ব্যয় ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। হিসাবপাতি’র ব্যবহারবিধি ও ফিচারের বিস্তারিত বুঝতে ইউটিউবে বাংলায় ডেমো ভিডিও দেখুন। 

জমা খরচের ডিজিটাল খাতা- হিসাবপাতি’র ডেমো

হিসাবপাতি সহজ ও সাশ্রয়ী হিসাবরক্ষণ অ্যাপ। এর সাবস্ক্রিপশন ফি বিভিন্ন মেয়াদে এবং সুলভ প্যাকেজে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে। হিসাবপাতি’র সকল প্যাকেজের মূল্য ও ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের প্যাকেজটি! আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা!

Search
সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ
আজই আমাদের অ্যাপ ডাউনলোড করুন
অনলাইন বা অফলাইনে যেকোন জায়গা থেকে সহজেই আপনার দৈনন্দিন ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করুন।